শীত নানা রকম যাত্রাপালা বা যাত্রাগানের প্রচলন রয়েছে আমাদের দেশে। শীত মানে যেন নানা ধরনের নাট্যগীতের দাপট। শীতকালজুড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গাজীর গীত, মানিক পীরের গীত, মাদার পীরের গীতসহ বিভিন্ন ধরনের যাত্রাপালা অভিনীত হয়ে থাকে। কোনো কোনো যাত্রাপালা অভিনীত হয় গ্রামের সাধারণ মানুষেরই উদ্যোগে; তাদেরই অভিনয়ে সখের যাত্রাপালা হিসেবে। গ্রামের সাধারণ কৃষক, কামার, কুমার, মুটে, ভ্যানচালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশাজীবী মানুষ নিজেরাই শীতের প্রথম দিকে মহড়া দিয়ে যাত্রায় অভিনয় করে থাকে। অন্যদিকে কিছু পেশাদার যাত্রার দল পেশাদার অভিনেতাদের নিয়ে শীতকালজুড়ে পরিবেশন করে যাত্রাপালা।
ভূমি সমতল থেকে দু-তিন ফুট উঁচুতে যাত্রামঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চের চারদিকে পাটি, চেয়ার, বেঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের আসনে দর্শকেরা বসে। মঞ্চের বাইরে আসরের এক দিকে বসে বাদ্যযন্ত্রী দল। মঞ্চ থেকে সাজঘরের দরজা পর্যন্ত দুই দিকে বাঁশ বেঁধে কুশীলবদের যাতায়াতের জন্য একটি পথ তৈরি করা হয়।
সাধারণত আলোকোজ্জ্বল রঙ্গমঞ্চে যাত্রাপালা পরিবেশিত হয়ে থাকে। অভিনয়ের আগে যাত্রার শিল্পী-কুশীলবেরা সাজঘরে অবস্থান করেন। সাজঘরে এক বা একাধিক রূপসজ্জাকারী সাজ-উপকরণ নিয়ে সদা প্রস্তুত থাকেন। যাত্রার পোশাক সরবরাহের জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যারা অর্থের বিনিময়ে পোশাক ভাড়া দিয়ে থাকে। পেশাদার দলগুলোর অবশ্য নিজস্ব পোশাক-পরিচ্ছদ থাকে।
0 comments to যাত্রাগীত :
Post a Comment