প্রায়
বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক ধরনের লোকগান হলো ঘাটু গান। ঘাটে ঘাটে নৌকা ভিড়িয়ে
এই গান পরিবেশন করা হতো বলে একে 'ঘাটের গান'ও বলা হয়। কেউ কেউ এই গানকে
'ঘেটু গান' বলে থাকে। নারীবেশে কিশোর বালক নৃত্য করে ঘাটু গান পরিবেশন করে।
ময়মনসিংহের পূর্বাঞ্চল, কুমিল্লার উত্তরাঞ্চল ও সিলেট জেলার পশ্চিমাঞ্চলে
একসময় ঘাটু গানের ব্যাপক প্রচলন ছিল। ঘাটু গানের কেন্দ্রে থাকে এক বা
একাধিক সুদর্শন কিশোর। এই কিশোররা সাধারণত লম্বা চুল ও সুকণ্ঠের অধিকারী
এবং অল্প বয়স্ক হয়ে থাকে। এরা বংশপরম্পরায় ঘাটু গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ
করে। ঘাটু গানে প্রধানত রাধাকৃষ্ণের প্রণয় এবং আদি রসাত্মক বিষয়গুলো স্থান
পায়। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে যখন নদী-নালা, খাল-বিল পানিতে ভরে ওঠে তখন
নৌকায় ঘাটু গানের আসর বসে। নৌকাগুলো ঘাটে ঘাটে দাঁড় করিয়ে ঘাটু গান
পরিবেশন করা হয়। ঘাটু গানের দলের প্রধান গায়ককে বলে 'সরকার'। ষোল শতকের
দিকে এই ঘাটু গানের প্রচলন হয় বলে ধারণা করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের প্রেমে মগ্ন
এক ভক্ত রাধা সেজে কৃষ্ণের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। ক্রমে তাঁর অনেক ভক্ত
গড়ে ওঠে। শিষ্যদের মধ্যে ছেলেশিশুদের রাধার সখী সাজিয়ে নেচে নেচে বিরহ
সংগীত পরিবেশন করা হতো। ক্রমে এই বালকরাই ঘাটু নামে পরিচিত হয়ে ওঠে এবং
এদের নিয়েই গড়ে ওঠে ঘাটু গানের দল। তবে বর্তমান আধুনিক সমাজে ঘাটু গানের
জনপ্রিয়তা একেবারেই কমে এসেছে।
Read More >>
Showing posts with label ঘাটু. Show all posts
Showing posts with label ঘাটু. Show all posts
- Home
- ঘাটু
Subscribe to:
Posts (Atom)