গজল
সংগীতপ্রেমী সব মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। মৃদু সুরের গজল খুব সহজেই
মানুষের হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। গজল শব্দের আক্ষরিক অর্থ 'প্রেমিক-প্রেমিকার
কথোপকথন'। তাই গজল গানকে প্রণয় সংগীতও বলা হয়। গজল গান দুটো পঙ্ক্তি নিয়ে
রচিত। প্রতিটি খণ্ডকে 'শের' বলা হয়। অনেক 'শের' নিয়ে একটি গজল লেখা হয়। শের
কখনো একই বক্তব্য নিয়ে লেখা হয় আবার কখনো এতে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর
উপস্থাপনা দেখা যায়। স্রষ্টার প্রতি ভক্তি, মানব মনের নানাবিধ দিক নিয়ে গজল
লেখা। গজল গানে সুরের চেয়ে কথার প্রাধান্য বেশি। পারস্যের বিখ্যাত সাধক
কবিরা যে গজলগুলো রচনা করেন তাতে গভীর দার্শনিক তত্ত্ব দেখা যায়। মাওলানা
জালালউদ্দিন রুমী, মির্জা গালিব ও আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল গজল রচনায়
কিংবদন্তি হয়ে আছেন। পারস্যে এই গজলের উৎপত্তি হয়। পরে পৃথিবীর বিভিন্ন
দেশে বিভিন্ন ভাষায় গজল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ফারসি ভাষায় গজলের বিকাশ হলেও
গজল সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পায় উর্দু ভাষায়। আরবি, ফারসি, পশতু ও উর্দু ছাড়াও
হিন্দি, পাঞ্জাবি, মারাঠি, বাংলা এমনকি ইংরেজিতেও গজল লেখা হয়। ভারতীয়
সংগীত পারস্য সংগীত দ্বারা প্রভাবিত হলে ভারতীয় গানের ধারায় গজল প্রবেশ
করে। বাংলা গজল রচনার পথিকৃৎ হলেন অতুলপ্রসাদ সেন। পরে কবি কাজী নজরুল
ইসলামের হাত ধরে বাংলা গজল জনপ্রিয়তা লাভ করে।
গ্রন্থনা : তৈমুর ফারুক তুষার
0 comments to গজল :
Post a Comment